নিবাসের অভিজ্ঞতা :-
বৃদ্ধাবাস ও বৃদ্ধাশ্রম এই কথাটা কানে এলে মনের মধ্যে ঘৃনা বা পাপবোধ জন্মায়, মনে হয় একান্ত প্রিয় মানুষটিকে বৃদ্ধাবাস বা বৃদ্ধাশ্রমে দিয়ে বড়ো ভুল হয়েছে । এই ভুলের হয়তো ক্ষমা নেই । তার সঙ্গে পাড়া প্রতিবেশী ,আত্মীয় স্বজনের রোষের মুখে পড়া- ইস কি ছেলে/মেয়ে /আত্মীয়-রে বাবা! বৃদ্ধাশ্রম বা বৃদ্ধাশ্রমে রেখেছে সারা জীবন কষ্ট করার এই পরিনাম -এই কথাগুলি সভ্য শিক্ষিত সমাজ থেকে বৃদ্ধাবাস বা বৃদ্ধাশ্রম সম্পর্কে প্রায়ই শোনা যায় ।-হয়তো আপনিও শুনে থাকবেন । আজকের বৃদ্ধাবাস বা বৃদ্ধাশ্রমের প্রয়োজনীয়তা অন্য মাত্রায় পৌঁছে গেছে, যেমন-
1. একটি ছেলে/মেয়ে কর্ম সূত্রে অথবা বৈবাহিক সূত্রে বাইরে , বৃদ্ধা মা- বৃদ্ধ বাবা বাড়িতে একা কি করে থাকবেন?
2. ভাইপো-ভাইজি কর্ম সূত্রে অথবা বৈবাহিক সূত্রে বাইরে, অবিবাহিত/নিঃসন্তান/অসুস্থ/শয্যাশায়ী কাকা ,জ্যাঠা / অবিবাহিতা / বাল্যবিধবা /নিঃসন্তান/অসুস্থ/শয্যাশায়ী পিসি , বিধবা/নিঃসন্তান/ অসুস্থ/শয্যাশায়ী কাকিমা-জ্যেঠিমা বাড়িতে একা কি করে থাকবেন?
3.ভাগ্না-ভাগ্নী কর্ম সূত্রে অথবা বৈবাহিক সূত্রে বাইরে , অবিবাহিত/নিঃসন্তান / অসুস্থ/শয্যাশায়ী মামা ,অবিবাহিতা /বাল্যবিধবা/নিঃসন্তান/ অসুস্থ/শয্যাশায়ী মাসি , বিধবা/নিঃসন্তান/ অসুস্থ/শয্যাশায়ী মামি বাড়িতে একা কি করে থাকবেন?
4 . নাতি - নাতনি কর্ম সূত্রে অথবা বৈবাহিক সূত্রে বাইরে ,সেই নাতি - নাতনি যার শৈশবে মা-বাবা দুজনেই মারা গেছেন, সেই নাতি - নাতনি যারা ঠাকুমা / দিদা , দাদু-র কাছে মানুষ হয়েছে , সেই নাতি - নাতনি অতিবৃদ্ধা ঠাকুমা / অতিবৃদ্ধ দাদুকে বাড়িতে একা কি করে রাখবেন?
আজকের শিক্ষাগত পরিকাঠামো অর্থনৈতিক অবস্থা ও সামাজিক পরিস্থিতি অনুযায়ী বৃদ্ধাশ্রম বা বৃদ্ধাবাস কেন প্রয়োজন বা কাদের থাকার প্রয়োজন হয় তা দেবরূপ নিবাসে উঁকি মারলেই দেখা যাবে বা বোঝা যাবে ।
আজকের সমাজে .... বৃদ্ধাবাস / বৃদ্ধাশ্রমে থাকা কোনো অবহেলার কারণ হতে পারে না, বরং হতে পারে একাকিত্ব ও পরাধীনতা শেষ করা।
তাই মাননীয় শ্রী নচিকেতা বাবু আজ সময় এসেছে সে দিনের গাওয়া আপনার 'বৃদ্ধাশ্রম' নামক গানটি নিয়ে নতুন করে ভাবনার।